মানিব্যাগে ছিল ইন্টারন্যাশনাল কারেন্সির ক্রেডিট কার্ড, ডেভিট কার্ড, আইডি কার্ড.... আর ভ্রমনের সমস্ত টাকা। অটোর ভাড়া দিতে গিয়ে মানিবাগটা অটোতে ফেলে রেখে নেমে পড়ি। এরপর হেটে হেটে অনেকটা পথ চলে গেছি। হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার পকেটে মানিব্যাগ নেই!!! কি সর্বনাশ! তাহলে হোটেল ভাড়া দেবো কি করে? কেমন করে খাবার খাবো? কিভাবে দেশে ফিরবো??? নানা দুশ্চিন্তায় মাথায় চক্র দিয়ে উঠলো! মানি ব্যাগে এতোগুলো টাকা রয়েছে, কেউ পেলে ফেরত দেয়ার সম্ভাবনা একেবারই নেই। তাছাড়া অটো চালকের নাম বা তার গাড়ির নম্বর কোন কিছুই জানা নেই!! তাহলে কেমনে কি করবো। কিভাবে খোজ পাবো সেই অটো চালকের। শুধু অটো চালকের মুখের আদলটা মনে আছে। এই মনে থাকা দিয়ে এতো বড় শহরে কাউকে খুজে পাওয়া সম্ভব নয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ দেবারর মত তথ্য নেই আমার কাছে। আমি শুধু বলতে পারি আমার মানিব্যাগ অটোতে হারিয়ে গেছে, ঘটে গেছে আমার সবর্নাশ.... শেষমেস চলে গেলাম ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। যাবার সময় মাথা হাজার চিন্তা ঘুড়পাক খেলো। মানিব্যাগ কি ফিরে পাবো? নাকি টাকার লোভে সেটা কেউ মেরে দিয়ে অস্বীকার করবে? নানা আশপাশ চিন্তা করে মানিবাগ ফিরে পাবার আশা ছেড়ে দিয়েই ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে গেলাম। আমি চালককে চিনতে পারবো ভেবে চালক খুজতে লাগলাম। চালকের কোন পাত্তা নেই। তারপরও সামান্য আশা নিয়ে এক চালককে ঘটনাটা বললাম। ওই চালক বললো পাবার সম্ভাবনা নেই। হঠাৎ মাঝ বয়সি একজন চালক এসে আমাকে বললো কি হয়েছে আপনার। বললাম আমার মানিব্যাগ হারিয়েছি। তিনি বিরক্ত হয়ে বললেন "আপনাকে বার বার কল দিচ্ছে, আপনি মোবাইল বন্ধ করে রাখছেন কেন? আপনার মানিব্যাগ বিশ্বজিতের কাছে আছে। তার মোবাইল নম্বরটা নেন, কল দেন " আমি এবার আকাশ থেকে পড়লাম। এওকি সম্ভব! আমার সামনে মাঝবয়সি লোকটা ওই চালককে কল দিলো। চালক জানালো ৫ মিনিটের মধ্যে সে স্ট্যান্ডে পৌছাবে। আমি এবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। ৩ মিনিটের মধ্যে চালক এসে গেলো। আমাকে দেখে কি মিস্টি একটা হাসি দিলেন তিনি। আমার মনটা ভরে গেলো। তিনি মানিব্যাগ ফিরিয়ে দিলেন। আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। সত্যই বুকটা ভরে গেলো। এ যেন কোন মহামানবের স্পর্শ পেলাম। করলাম সম্মান, মানিবাগ খুলে বললাম যা খুশি যত খুশি নেন, ইচ্ছে করলে সব টাকা নিয়ে নিতে পারেন। তিনি নিলেন না। অবশেষে আমি নিজে তার খুশি হবার মত টাকা বের করে দিয়ে দিলাম। আনন্দ দুজনের মনেই জেগে উঠলো। মনে মনে ভাবলাম, দমিনিক ল্যাপিয়র যেভাবেই বলুক, যে ধরনের গল্পেই বলুক, আসলেই কোলকাতা
স্যালুট টু বিশ্বজিৎ দা ♥♥♥