বর্তমান
যুগে ইউটিউব ছাড়া জীবন কল্পনা করা কঠিন। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত
এই ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্মটি ২০০৫ সালে গঠিত হয়। বর্তমানে
প্রতিমাসে প্রায় ২০০
কোটির অধিক ব্যবহারকারী সক্রিয়ভাবে ইউটিউব ব্যবহার করছে।
শুধু
বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এর ইউটিউব দিনে
শত শত কোটি ডলার
আয় করে থাকে। এক একটি কনটেন্ট
থেকে যে আয় হয়
তার কিছু অংশ দেয়া হয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদেরকে। আর এ কারণেই
ইউটিউব এখন অর্থ উপার্জনের বড় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম এবং কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করতে হয় তা অনেকেই
জানেন না।
অনেকেই
না বুঝে না জেনে ইউটিউব
চ্যানেল খুলছে বাড়তি উপার্জনের আশায়। কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখা যায় ইউটিউবে এতো চ্যানেল থাকলেও এখান থেকে কিন্তু সবাই আয় করতে পারে না।
এই
তীব্র প্রতিযোগিতার স্থানে টিকে থাকতে হলে হতে হবে পুরোপুরি পেশাদারি মনোভাবসম্পন্ন। কারণ সফল চ্যানেলগুলোর দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে এরা পুরোপুরি প্রফেশনাল। তাই ইউটিউবে সফল হতে হলে অবশ্যই প্রফেশনালভাবে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে।
ইউটিউব চ্যানেল
খোলার
নিয়ম
ইউটিউব
চ্যানেল হলো এমন একটি স্থান যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা ( ইউটিউব চ্যানেলের মালিক) ভিডিও আপলোড করে ও ভিউয়ারসরা তা
দেখে। যারা ভিডিও আপলোড করে তাদেরকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর বলে।
ইউটিউব
থেকে উপার্জনের জন্য অনেকেই চ্যানেল খুলতে চান। তখন তাদের মনে প্রশ্ন জাগে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি লাগে অথবা
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম কি? সবচেেয় সহজ উত্তর হলো চ্যানেল খুলতে প্রয়োজন ইন্টারনেট সংযোগ ও একটি ডিভাইস।
পাশাপাশি লাগে একটি জিমেইল বা গুগল একাউন্ট।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর তা ভেরিভাই
করে নতুন ফিচার যোগ করার জন্য প্রয়োজন হয় মোবাই নম্বর।
ইউটিউব
চ্যানেল খোলার উপায়
• মোবাইল বা পিসি
• একটি সম্পূর্ণ ভেরিফায়েড জিমেইল অ্যাকাউন্ট
• ইউটিউব অ্যাপ
• ইন্টারনেট সংযোগ
অনেকের
ধারণা প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে অবশ্যই কম্পিউটারের প্রয়োজন। তবে এ ধারণা সঠিক
নয়। আমাদের হাতে থাকা পিসি দিয়েই আমরা ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারি।
ইউটিউব
চ্যানেল মূলত দুই ধরনের হয়। একটি পার্সোনাল চ্যানেল আরেকটি ব্রান্ড চ্যানেল। পারসোনাল চ্যানেলগুলো মূলত একজন ব্যাক্তিই নিয়ন্ত্রন করে থাকে। অন্যদিকে ব্রান্ড চ্যানেলগুলো কোন প্রতিষ্ঠান বা টিমের অধীনে
থাকে। ফলে পার্সোনাল চ্যানেলের চেয়ে ব্রান্ড চ্যানেলগুলো দেখতে বেশি প্রফেশনাল হয়ে থাকে।
কিভাবে
ইউটিউব চ্যানেল খুলবো
মোবাইল
দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
হাতে থাকা মোবাইল ডিভাইসটিতে যদি ইউটিউব অ্যাপ ও জিমেইল অ্যাকাউন্ট
থাকে তাহলে ইউটিউব চ্যানেল খোলা একধাপ এগিয়ে যায়। মোবাইল চ্যানেল থেকে ইউটিউব অ্যাকাউন্ট খুলতে-
• সর্বপ্রথমে ইউটিউব অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।
• ইউটিউব অ্যাপে প্রবেশ করতে হবে।
• টপ মেন্যুর একবারে
উপরে ডানপাশ থেকে প্রোফাইল পিকচারে ক্লিক করতে হবে।
• এরপর মাইচ্যানেল এই লেখাটিতে ক্লিক
করতে হবে।
• চ্যানেলের নাম দিয়ে ক্রিয়েট চ্যানেলে চাপতে হবে।
• এভাবেই একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে।
• তবে আপনার মোবাইলে একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকার পরেও যদি আরেকটি চ্যানেল ওপেন করতে চান তাহলে যা করতে হবে-
o ক্রোম ব্রাউজার ওপেন করতে হবে
o এরপর
https://www.youtube.com/account এ প্রবেশ করতে
হবে।
o একদম ওপরে থাকা থ্রিডট মেন্যু থেকে ডেস্কটপ মুড চালু করতে হবে।
o সাইন না থাকলে জিমেইল
অ্যাকাউন্টে সাইন করতে হবে।
o অ্যাড অথবা ম্যানেজ ইউর চ্যানেল লিংক সিলেক্ট করতে হবে।
o ক্রিয়েট চ্যানেল লিংক সিলেক্ট করতে হবে।
o ঠিক করে রাখা চ্যানেলের নাম লিখে ক্রিয়েটে চাপলেই হয়ে গেলো ইউটিউব চ্যানেল।
চ্যানেলটিতে
কোন ধরনের ভিডিও পোস্ট করা হবে সে বিষয়গুলি সিলেক্ট
করতে হবে। সেইসাথে প্রয়োজনীয় লোকেশনসহ যাবতীয় তথ্যযুক্ত করার মাধ্যমে একটি ইউটিউব অ্যাকাউন্ট পরিপূর্ণ হয়।
কম্পিউটার
থেকে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
• সর্বপ্রথমে ব্রাউজার থেকে
https://youtube.com প্রবেশ করতে হবে।
• জিমেইল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করতে হবে।
• একদম উপরে ডানপাশে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করতে হবে।
• এরপর মাই চ্যানেলে ক্লিক করতে হবে।
• চ্যানেলের নাম লিখে ক্রিয়েটে ক্লিক করতে হবে
এভাবে
একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা হয়ে গেলে প্রোফাইল পিকচার সেট করে দিতে হবে। প্রথমে পিকচার বড় করে চ্যানেলের ধরণ নির্বাচন করতে হবে। সেসঙ্গে চ্যানেল মালিকের সব সোশ্যাল মিডিয়া
সাইটের লিংক দিতে হবে।
একটি
ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে ডেস্কটপ থেকে আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করতে চাইলে-
• যেকোন ব্রাউজার থেকে
https://www.youtube.com/account এ প্রবেশ করতে
হবে।
• জিমেইল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করতে হবে।
• অ্যাড অথবা ম্যানেজ ইউর চ্যানেলে ক্লিক করতে হবে।
• এরপর ক্রিয়েট চ্যানেলে ক্লিক করতে হবে।
• যে নামে চ্যানেলটি
হবে সেই নাম লিখে ক্রিয়েটে ক্লিক করতে হবে
ইউটিউব
চ্যানেলের সেটিংস
ইউটিউবে
রান্না, পড়াশোনা, খেলা, ক্রাফটিংসহ নানারকম চ্যানেল তৈরি করা হয়। তবে শুধুমাত্র চ্যানেল তৈরি করে বসে থাকলেই হবে না। ভিউয়ারসদের কাছে আকর্ষণীয় থাকার জন্য চ্যানেলটির সাজুগুজু বা সেটিংস খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে অনেকের
মনেই প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল কিভাবে সেটিংস করা যায়। প্রথমে ইউটিউব সেটিংস অপশনে যেতে হবে। এরপর বেসিক সেটিংস অপশন থেকে প্রোফাইল ও কভার ফটো
যুক্ত করতে হবে। এরপর ইউটিউব চ্যানেলটি মোবাইল নম্বর দিয়ে ভেরিফাই করে নিতে হবে।
ইউটিউব
চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম
ইউটিউব
চ্যানেল খুললেই যেসব কাজ সম্পূর্ণ হবে, তা কিন্তু নয়।
ইউটিউব চ্যানেল চালানোর ক্ষেত্রে ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ।
যেভাবে
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করা যাবে-
১.
প্রথমে নিজের ই-মেইল আইডি
এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউবে লগ-ইন করতে
হবে।
২.
ই-মেইল আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করার
পর ডান দিকে একদম ওপরের দিকে প্রোফাইল ফটোতে ক্লিক করলে সেখানে কিছু অপশন আসবে।
৩.
সেখান থেকে YOUTUBE STUDIO অপশনে ক্লিক করতে হবে।
৪.
এবার SETTING অপশনে ক্লিক করে ইউটিউব চ্যানেলের সেটিং পেজে যেতে হবে।
৫.
সেটিংস থেকে CHANNEL অপশনে ক্লিক করতে হবে।
৬.
তারপর FEATURE
ELIGIBILITY অপশনে ক্লিক করতে হবে।
৭.
এই দুটি ধাপ শেষ করে ELIGIBLE OPTIONS এ ক্লিক করতে
হবে।
৮.
সর্বশেষ, VERIFY
PHONE NUMBER অপশনে এ কিøক
করতে হবে।
৯.
ফোন ভেরিফাই করা জন্য COUNTRY SELECT করুন।
১০.
তার পর নিজের MOBILE NUMBER TYPE করতে হবে।
১১.
এরপর GET CODE বাটনে ক্লিক করুন।
১২.
মোবাইল নম্বরে ছয় ডিজিটের ভেরিফিকেশন কোড আসবে। সেখানে CODE দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
১৩.
এরপর
Congratulations! Your Phone Number Is Now Verified লেখা একটি
মেসেজ আসবে। এর মানে হলো
ইউটিউব চ্যানেলটির ভেরিফিকেশন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
কিভাবে
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করবেন?
একটি
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চ্যানেলটি ভেরিফাই করার অর্থ হলো এটি বৈধ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া।
অন্যথায়
এটি ফেক হিসেবে ধরে নেয়া হবে। তাই ইউটিউব চ্যানেল কর্তপক্ষের আস্থা অর্জন করতে হলে চ্যানেলটি অবশ্যই ভেরিফাই করে নিতে হবে।
এছাড়া
লম্বা ভিডিও আপলোড করার জন্য চ্যানেলটি ভেরিফায়েড হতে হবে। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় নন-ভেরিফায়েড ইউটিউব
চ্যানেলকে মাত্র ১৫ মিনিটের ভিডিও
আপলোড করতে দেয়া হয়।
কিন্তু
চ্যানেলটি ভেরিফায়েড হয়ে গেলে নিজের ইচ্ছামত বড় ভিডিও আপলোড করা যায়। এছাড়া চ্যানেলে নিরাপত্তার জন্যও এটি প্রয়োজন।
কারণ
কোন থার্ড পার্টি যদি মালিককে না জানিয়ে কোন
ভিডিও আপলোড করে তাহলে কপি রাইট ক্লেম করা যাবে। অনেক ইউটিউবের মাধ্যমে লাইভ করতে হয়। চ্যানেলটি ভেরিফায়েড না থাকলে এ
সুবিধাবি ত হতে হবে।
যেভাবে
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করা যায়
গুগল
ক্রোম ব্রাউজারে
https://youtube.com যেতে
হবে। আর মোবাইলের ক্ষেত্রে
ইউটিউব অ্যাপস অন করতে হবে।
এরপর
ইউটিউব আসলে ইউটিউব চ্যানেল লগো আইকন অথবা জিমেইলে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করতে হবে। এরপর সেখানে লম্বা লিস্ট আসবে । সেখান থেকে
ইউটিউব স্টুডিওতে ক্লিক করতে হবে। ইউটিউব সেটিংস নামে একটি অপশন থাকবে সেখানে ক্লিক করার পর সেটিংসের ইন্টারফেস
ওপেন হবে। এখান থেকে চ্যানেলে ক্লিক করতে হবে। এখানে ক্লিক করার পর INFO > ADVANCED
SETTINGS> FEATURE ELIGIBILITY এই
তিনটি অপশন আসবে। এখান থেকে FEATURE
ELIGIBILITY অপশনে ক্লিক
করতে হবে। এরপর এখানে দুটি অপশনের ঘর অধসবে এরথেকে
দ্বিতীয়টা অর্থাৎ Features that
require phone verification দ্বিতীয়টা
অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখানে ক্লিক করার পর একটি সচল
মোবাইল নম্বর চাইবে। এখানে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি দিতে হবে। এরপর সাবমিট অথবা ভেরিফায়েডে ক্লিক করার পর কয়েক সেকেন্ডের
মধ্যে একটি কোড পাঠানো হবে। এই কোডটি বসিয়ে
দিলেই ইউটিউব কর্তৃপক্ষ চ্যানেলটি ভেরিফায়েড করে দিবে।
ইউটিউব
ভিডিও বানাতে কি কি লাগে?
ইউটিউব
ভিডিওটি কোন ধরনের হবে তার ওপর নির্ভর করে কোন কোন জিনিস প্রয়োজন। তবে সাধারনত প্রফেশনাল ইউটিউব ভিডিও তৈরি করতে হলে একটি ল্যাপটপ অথবা ডেস্কটপ, ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার, একটি প্রফেশনাল ক্যামেরা ও ভয়েজ রেকর্ডিংয়ের
জন্য মাইক্রোফোন। এছাড়া ভিডিওকে আরো প্রফেশনাল লুক দেয়ার জন্য ট্রাইপড, লাইটিং সেটআপ, একটি গ্রিন রংয়ের পোটলা ও ভিডিও রেকর্ড
করার জায়গা।
ইউটিউব
ভিডিও তৈরির নিয়ম
ইউটিউব
চ্যানেলের জন্য চমৎকার ভিডিও তৈরি করতে হলে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে। অনথ্যায় ভিডিওটি যথেষ্ট পরিমান ভিউয়ারস আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে না।
ইউটিউব
ভিডিও করতে হলে যে নিয়ম মানতে
হবে-
• ভিডিওর নিশ বা বিষয়বস্তু বাছাই
করা
• নিস অনুাযয়ি সহজ কীওয়ার্ড রিসার্চ করা
• সঠিক ও সহজ স্ক্রিপ্ট
লেখা
• স্ক্রিপ্ট অনুযায়ি ভিডিও রেকর্ড অথবা ফুটেজ তৈরি করা
• ভিডিও এডিট করা
• ভিডিওটি সঠিকভাবে ইউটিউবে আপলোড করা
ইউটিউব
ভিডিও তৈরির ক্ষেত্রে প্রথম শর্ত হলো ভিডিওর নিস বা বিষয়বস্তু ঠিক
করা। কারণ কোন বিষয়ের ওপর ভিডিওটি তৈরি করা হবে তা নির্দিষ্ট না
থাকলে কাজটিই সম্পূর্ণ হবে না। যেমন: কেউ যদি রান্না-বান্নার চ্যানেল ওপেন করলে সেখানে খাবারের ভিডিও আপলোড করা হবে। বিষয়বস্তু নির্ধারনের পর টপিক অনুযায়ি
কীওয়ার্ড বের করতে হবে। এই কীওয়ার্ড হতে
হবে সহজ ও রেংকএবল। যাতে
ভিডিও আপলোড করার সাথে সাথেই র্যাং ক করা শুরু
হয়। এতে করে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি হয়।
ইউটিউব
ভিডিও তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ভিডিও এডিট করা। ইন্টারনেটে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার পাওয়া যায়। এগুলোর সাহায্যে চমৎকারভাবে ভিডিও এডিট করা যায়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য সফটওয়্যারগুলো হচ্ছে-
• Camtasia
• Kinemaster
• Pinnacle
Studio
• Filmora 9
• Vegas Pro
17
• DaVinci
Resolve
• Adobe
Premiere Pro
ইউটিউবের
নিয়ম-কানুন
চলতি
বছরের শুরুতেই ইউটিউবের জন্য নতুন কিছু নিয়ম-কানুন ঠিক করা হয়েছে। বলা হচ্ছে এই নতুন নিয়মগুলোর
কারণে সদ্য ইউটিউব চ্যানেল খোলেছেন এমন ব্যাক্তিদের জন্য দুঃসংবাদ। নতুন নিয়ম অনুযায়ি ইউটিউব চ্যানেলটি উপার্জনসক্ষম বা মনেটাইজেশন ইলিজাবল
করতে হলে সর্বশেষ ১২ মাসে চার
হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে এবং সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা হতে হবে কমপক্ষে এক হাজার। ফলে
দেখা যাচ্ছে কিছুদিন আগেও যেসব ইউটিউব চ্যানেল উপার্জনসক্ষম ছিলো নতুন নিয়মের কারণে সেগুলো এখন অর্থ উপার্জনের অযোগ্য বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ইউটিউবে কনটেন্ট আপলোডেরও কিছু নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। ফলে দেখা যাচ্ছে এসব নিয়ম মেনে না চলার কারণে
চার ঘন্টা ওয়াচ টাইম ও এক হাজার
সাবসক্রাইবার থাকা সত্তে¦ও আপনার চ্যানেলটি
মনিটাইজেশন ইলিজাবল নাও হতে পারে।
ইউটিউবের
নতুন নিয়ম অনুযায়ি যে ধরনের কনটেন্ট
তৈরি করা যাবে না
হ্যাকিং-ক্রেকিং কনটেন্ট তৈরি না করা
অনেকেই
ইউটিউব চ্যানেলে ভিউ বাড়ানোর জন্য হ্যাকিং-ক্রেকিং কনটেন্ট তৈরি করে আপলোড করে থাকে। ইউটিউবের নতুন নীতিমালায় এ ধরনের ভিডিও
তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
সেক্সুয়াল
কনটেন্ট তৈরি করা যাবে না:
আমরা
দেখেছি চ্যানেলে বেশি ভিউয়ার আকৃষ্ট করতে পর্ণগ্রাফী বা এডাল্ট ভিডিও
প্রকাশ করে থাকে অনেকে। তবে ইউটিউব কিন্তু এ ধরনের কনটেন্ট
প্রকাশ করার প্লাটফর্ম নয়। তাই এ ধরনের কোন
ভিডিও আপলোড দিলে তা Nudity and Sexual
Content Policies আওতায়
পড়বে।
সংশ্লিষ্ট
নয় এমন ভিডিও টাইটেল বা ছবি প্রকাশ
করা যাবে না: ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন ভিডিও টাইটেল বা ছবি প্রকাশ
করলে তা স্প্যামের আওতায়
পড়বে।
সোশ্যাল
মিডিয়ায় ভিডিও বেশি শেয়ার করা যাবে না: ভিউ বাড়ানোর জন্য ইউটিউব ভিডিও অনেক বেশি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়। ইউটিউবের নতুন নিয়ম অনুযায়ি চ্যানেলের ভিডিওগুলো অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলে চ্যানেলটির মনিটাইজেশন ডিজঅ্যাবল হয়ে যেতে পারে।
ইউটিউবে
ভিডিও কিভাবে আপলোড করা যায়?
ইউটিউব
চ্যানেলের জন্য ভিডিও শুধুমাত্র তৈরি করলেই হবে না। সঠিক নিয়ম মেনে ভিডিওটি আপলোডও করতে হবে। যেভাবে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করা যায়-
মোবাইল
থেকে-
• ইউটিউব অ্যাপ ওপেন করতে হবে।
• নিচের মেন্যু থেকে প্লাস চিহ্নিত আইকন চাপতে হবে।
• আপলোড এ ভিডিও সিলেক্ট
করার পর যে ভিডিও
আপলোড করা হবে তা বাছাই করতে
হবে।
• এরপর ভিডিওর টাইটেল, ডেসক্রিপশন ইত্যাদি দিতে হবে।
• এরপর আপলোড চাপার পর কিছু সময়ের
মধ্যেই ভিডিওটি চ্যানেলে আপলোড হয়ে যাবে।
কম্পিউটার
থেকে-
• ইউটিউবে প্রবেশ করতে হবে
• জিমেইল আইডি সাইন ইন করতে হবে
• টপবারে থাকা ভিডিও আইকনে ক্লিক করতে হবে
• আপলোড ভিডিওতে ক্লিক করতে হবে
• এরপর সিলেক্ট ফাইল টু আপলোড থেকে
কনটেন্টটি বাছাই করতে হবে
• ভিডিও সংক্রান্ত তথ্য ট্যাগ, ক্যাটাগরি, টাইটেল ইত্যাদি লেখার পর নেক্সট বাটনে
চাপ দিতে হবে
• এরপর ভিডিওটিতে কপিরাইট সংক্রান্ত কোন বিষয় থাকলে দেখানো হবে
ইউটিউব
চ্যানেলে ভিউ ও সাবসক্রাইবার বাড়ানোর
টিপস:
চ্যানেলটি নতুন চালু হলে ভিউ ও সাবসক্রাইবার বৃদ্ধি
পেতে কিছুটা সময় লাগবে। এছাড়া কিছু টিপসও অনুসরন করা যায়।
-এডিট
প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য ভালো এডিট সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে
-নিয়মিত
ভিডিও আপলোড করার জন্য কয়েকটি কনটেন্ট আগাম প্লান করে রাখতে হবে
-সবধর্মী
অন্যান্য চ্যানেল থেকে অনুপ্রেরণা নেয়া যায়
-সার্চ
ও এসইওর জন্য ভিডিওর টাইটেল অপটিমাইজ করতে হবে
-সোশ্যাল
মিডিয়ায় নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে
-ভিডিওর
প্রেক্ষিতে আসা কমেন্টের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে
ইউটিউব
চ্যানেল মনিটাইজেশন
মনিটাইজেশন
শব্দের অর্থ হলো মুদ্রায়ন বা আয়ের উপযোগি
করে তোলা। ইউটিউব মনিটাইজেশন হচ্ছে ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জনের একটি প্রক্রিয়া।
বিজ্ঞাপন
হলো ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জনের প্রধানতম পথ। এছাড়ও সেন্সরশীপ ও প্রোডাক্ট সেলিং
থেকেও অর্থ উপার্জণ করা যায়।
ইউটিউব
বিজ্ঞাপনদাতাদেরকে বিজ্ঞাপন প্রচারের অনুমোদন দেয় ও কনটেন্ট নির্মাতাদের
এই বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয়ের একটি অংশ দেয়। ইউটিউব মনিটাইজেশন হওয়ার পর অর্জিত টাকা
গুগল এডসেন্সে জমা হয়। ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন হওয়ার জন্য আবেদন করার পাশাপাশি গুগল এডসেন্সে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এই অ্যাকাউন্টের সাথে
ইউটিউব চ্যানেলটি কানেক্টেড থাকবে। ইউটিউব চ্যানেলে যত আয় হবে
তা এই অ্যাকাউন্টে জমা
হবে যা পরবর্তীতে ব্যাংকের
মাধ্যমে উঠাতে হবে।
চ্যানেল
মনিটাইজেশন করার শর্ত-
-চ্যানেলটির
এক হাজার সাবসক্রাইবার থাকতে হবে
-এক
বছরের মধ্যে চার হাজার ঘন্টা ওয়াচটাইম অর্জন করতে হবে
-ইউটিউব
কর্তৃপক্ষের পলিসি বা গাইডলাইন মেনে
চলতে হবে
-চ্যানেলে
কোন কপি করা ভিডিও আপলোড করা যাবে না
-ভিডিওতে
অন্য কারো অডিও ব্যবহার করা যাবে না
পরিশেষেবর্তমান
যুগে উপার্জনের পথ আর ধরাবাধা
আগের নিয়মে আটকে নেই। চাকুরি বা ব্যবসার মতো
গতানুগতিক ধারা ছাড়াও অন্যভাবেও অর্থ উপার্জন করা যায়। যা ঘরে বসেও
সম্ভব। ইন্টারনেট আমাদের সে সুযোগ করে
দিয়েছে । ইউটিউব চ্যানেল
এমনই একটি মাধ্যম। সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে চলে ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করলে তা অর্থ উপার্জনের
বড় একটি মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। তাই ইউটিউবকেউ একটি ভালো ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়া যায়।
মুল পোস্ট লিংক