November 2015

দিবানিশি থাক মন ঐ ধ্যানে দিবানিশি থাক মন ঐ ধ্যানে। যার প্রতি হয় গুরুর দয়া বিবাদ নাই তার কোনখানে। দিব্যজ্ঞানের পাপী যারা খোদার কি রূপ জানে তারা ও তা জানবে কেনে অহিকেরা জ্ঞানীর মর্ম জানে জ্ঞানী জনে।। মুরশিদ জ্ঞান সঁপিল যারে ও তার মনের আন্ধার যাবে দূরে জ্ঞান-চক্ষে দেখবি তারে ও তাই ভাবছ মনে মনে।। লালন শাহ দরবেশ বলে শোন রে কিনু, বলি তোরে কি করিবে তোর মান গুমানে এখন সঁপেছি ফটিক চান্দের চরণে।। ——————————— হারামণি, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৯১-৯২, ৯৭ গ্রন্থে একই গানের দুটি পাঠ আছে। উভয়ের সমম্বয় করে পাঠটি নির্ণয় করা হয়েছে। অভোগে অন্ত্যমিলের ব্যত্যয় ঘটেছে।। ৯১-৯২ পৃষ্ঠায় সঞ্চারী ও আভোগের মিশ্রণজাত পাঠটি এরূপ: মুর্শিদ জ্ঞান সঁপিল যাবে ও তার মনের আন্ধার যাবে দূরে তাই লালন বলে, জ্ঞান-চক্ষে দেখবি তারে কি করিবে তোর কাল শমনে। দৃষ্টি কেবল সিরাজ সাঁইর চরণে।। শেষের চরণটি বাড়তি; লালনের গানে এমনটি থাকার কথা নয়।



নবীজী মরশিদ কোন ঘরে
নবীজী মরশিদ কোন ঘরে।
কোন কোন চার ইয়ার
            এসে চাঁদোয়া ধরে।।
ও তারিন তারে কোন পেয়ালা
জানিতে উচিত হয় নিরালা
ও বরুণ জ্যোতি-জ্বালা
            কোন যোগে কোন আশ্রয় সার্থক করে।।
যার কলেমায় দীন দুনিয়ায়
কেহ মুরশিদ হল কোন কলেমায়
নেহাজ করে দেখ মনুরায়
            মরশিদ-তও্ব অথাই গভীরে।।
মওরা মওরি কোন দিনে নিলে
যোগে প্রকাশ করিলে
সিরাজ সাঁই ইসারায় বলে
            লালন ঘুরে বেড়ায় বুদ্ধির ফেরে।।
——————————— লালন-গীতিকা, পৃ. ১৫৭-৫৮



না জেনে করণ কারণ কথায় কি হবে
না জেনে করণ কারণ কথায় কি হবে।
কথায় যদি ফলে কৃষি
            বীজ কেনে রোপে।।
গুড় বলতে কি মুখ মিঠা হয়
দীপ না জ্বালিলে আন্ধার কি যায়
তেমনি জেনো হরি বলায়
            হরি কি পাবে।।
রাজার পৌরাস করে
জমির কর বাঁচে না যে রে
সাঁই কি তোর একরারি কাজ রে
            পৌরাসে ছাড়বে।।
গুরু ধর খোদাকে চেনো
সাঁইর আইন আমলে আনো
লালন বলে, তবে মনো
            সাঁই তোরে নিবে।।
——————————— লালন ফকিরঃ কবি ও কাব্য, পৃ. ১২০  ‘পৌরাসশব্দের অর্থ বোঝা গেল না। সম্ভবত শব্দটি ঠিকভাবে লেখা হয়নি। পৌরুষহতে পারে।



বল গুরুর নাম বল
বল গুরুর নাম বল,
            ঐ নামে সুধা মাখা।
সুধা মাখা ঐ গুরুর নাম,
            বড় মধুর রসে মাখা।।
যে পাইয়াছে সেই পাইয়াছে
            অমৃত ফলের চাকা।
আবার মহাজনের ঘরে
            সেই মাল ছাপা।।
হইল অনুমানে ভজন নাস্তি
            বর্তমানে পাবে দেখা।
তাই লালন দরবেশে বলে
            আছে সেই মাল ঢাকা।।
তারে বর্তমানে সাধন করে
            ত্রিবেণীতে পাবি দেখা।।
——————————— হারামণি, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩২-৩৩ এরূপ আঙ্গিকে আটটি পূর্ণ চরণ থাকে। এখানে সাতটি চরণ আছে। সম্ভবত একটি চরণ লোপ পেয়েছে।



ভজ মুরশিদের কদম এই বেলা
ভজ মুরশিদের কদম এই বেলা।
যার পিয়ালা হৃদ-কমলে
            ক্রমে হবে উজালা।।
নবীজীর খান্দানেতে
পিয়ালা চার মতে
চিনে লও দিন থাকিতে
            ওরে আমার মন-ভোলা।।
কোথায় সেই হায়াত-নদী
জোয়ার বয় নিরবধি
সে ধারা ধরবি যদি
            দেখবি অটলের খেলা।।
ওপারে ছিলে ভাল
এপারে কে আনিল
লালন কয়, তারে ভোল
            করে যে অবহেলা।।
——————————— বাউল কবি লালন শাহ, পৃ. ৩১২-১৩ কথান্তর:
ভজ মুরশিদের কদম এই বেলা।
যার পিয়ালা হৃদ-কমলে
            ক্রমে হবে উজালা।।
নবীজীর সন্ধানেতে
পিয়ালা চারি মতে
জেনে নিও দিন থাকিতে
            ওরে আমার মন-ভোলা।।
কোথায় আবহায়াত-নদী
ধারা বয় নিরবধি
ধরবি সে ধারা যদি
            দেখবি অটলের খেলা।।
এপারে কে আনিল
ও পারে কে নেবে বল
লালন কয়, তারে ভোল
            কেন রে করে হেলা।।

------------
লালন-গীতিকা, পৃ. ১৫৩

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Theme images by Jason Morrow. Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget