ইরাকে জেগে ওঠছে ৩৪০০ বছরের পুরাতন শহর
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে বৈশ্বিক উষ্মায়ন। দেখা দিয়েছে তীব্র খরা । এই তীব্র খরায় ইরাকের কিমিউন এলাকায় টাইগ্রিস নদীর একাংশ শুকিয়ে গিয়েছে। ওই নদীতে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় চলতি বছরের শুরু থেকে শহরটির বিভিন্ন স্থাপনা ধীরে ধীরে ভেসে উঠছে। সেটা খনন করতেই বেরিয়ে এল এক সুপ্রাচীন এক সভ্যতা।
এটি ছিল মিত্তানি সাম্রাজ্যের অংশ। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫০ থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত এই শহরে মানুষের বসবাস ছিল। ওই সময়ের শহর এটি। অর্থাৎ শহরটি প্রায় ৩ হাজার ৪০০ বছরের পুরাতন। এতো দিন আস্ত এই শহরটি পানির নিচেই ডুবে ছিল।
মনে করা হচ্ছে ভূমিকম্পের কবলে পড়ে গোটা শহরটাই চাপা পড়ে যায় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। ২০২২ সালে এসে ফের সামনে এল খ্রীষ্টপূর্বাব্দের এই শহর।
শহরটির অস্তিত্ব ছিল ব্রোঞ্জ যুগে। বস্তুত, জার্মান এবং কুর্দিশ প্রত্নতাত্ত্বিকদের দু’টি দল যৌথভাবে খননকাজ চালিয়ে প্রাচীন এই শহরটিকে ফের জনসমক্ষে এনেছেন। বিগত কয়েকবছর ধরে শুকিয়ে গিয়েছে ট্রাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস নদীর জল। এমতবস্থায় যাতে ফসলের ক্ষতি না হয় তার জন্য মসুল বাধের লাগোয়া জলাধারে শুরু হয় খনন কার্য। এই খনন কার্য চালানোর সময়েই সন্ধান মেলে এই সুপ্রাচীন নগরীর।
ইরাকের এই প্রাচীন শহরের খননকাজে যুক্ত রয়েছেন জার্মানির তুরিনজেন ইউনিভার্সিার্টির প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। গত মঙ্গলবার (৮ জুন, ২০২২) এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি ইয়াক। দেশটির মসুল অঞ্চলে কয়েক মাস ধরে উষ্ণ আবহাওায়া ও বাড়তি তামমাত্রা বজায় রয়েছে। মসুল বাধের পানিও দ্রুত কমছে। এর জের ধরে ট্রাইগ্রিস নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় মসুল-সংলগ্ন স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলের কিমুনেতে অবস্থিত ব্রোঞ্জ যুগের প্রাচীন এই শহরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
জার্মান ও কুর্দিশ প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানান, এটি প্রাচীন মিত্তানি সাম্রাজ্যের সময়কার একটি শহর। শহরটিতে একটি প্রাসাদ রয়েছে। আরও রয়েছে কয়েকটি বড় আকারের ভবন। ধারণ করা হচ্ছে, খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫০ থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত এই শহরে মানুষের বসবাস ছিল। ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল প্রাচীন শহরটি। পরে ধীরে ধীরে আন্ত শহরটি টাইগ্রিসে তলিয়ে যায়। এখন আবারো প্রাকৃতিক দুর্যোগের (খরা) কারণে তলিয়ে যাওয়া শহরটি জেগে উঠতে শুরু করেছে।
Post a Comment